কোরিয়ার চার ঋতু

দক্ষিণ কোরিয়ায় চারটি ঋতু আছে। ঋতুগুলোর নাম হলোঃ
১. শীতকাল। যাকে কোরিয়ান ভাষায় বলা হয় খিয়উল।
২. বসন্তকাল। যাকে কোরিয়ান ভাষায় বলা হয় ফোম।
৩. গ্রীষ্মকাল। যাকে কোরিয়ান ভাষায় বলা হয় ইয়রুম।
৪. শরৎকাল। যাকে কোরিয়ান ভাষায় বলা হয় খাউল।
এই চারটি ঋতু প্রতি তিন মাস করে বিদ্যমান থাকে। ইংরেজি ক্যালেন্ডারের হিসেবে আমাদের দেশের মতই ডিসেম্বর + জানুয়ারি + ফেব্রুয়ারি এই তিনমাস হলো ওদের খিয়উল মানে শীতকাল। মার্চ + এপ্রিল + মে এই তিনমাস হলো ফোম মানে বসন্তকাল। জুন + জুলাই + আগস্ট হলো ইয়রুম মানে গ্রীষ্মকাল। আর সেপ্টেম্বর + অক্টোবর + নভেম্বর হলো খাউল মানে শরৎকাল। যদিও ওদের দেশে শীতের দাপট অনেক বেশি। এভেন এমনো হয় যে ওদের দেশে শীতকাল কখনো কখনো ৬মাসও বিদ্যমান থাকে।
তো আসুন কোরিয়ানদের ৪টি ঋতু সম্পর্কে ছোট্ট করে জেনে নেই।
প্রথমেই আসি শীতকালে। আমরা উপরেই জেনে নিলাম খিয়উল মানে শীতকাল। এটা ডিসেম্বর + জানুয়ারি + ফেব্রুয়ারী মাসে বিদ্যমান থাকে। শীতকালের আবহাওয়া বেশ বেশ ঠান্ডা হয়ে থাকে। ঠান্ডা কোরিয়ান হলো ছুপতা। তো ছুপতা যখন রীতিমতো শূন্য ডিগ্রির নিচে নেমে যায়। সেই শূণ্য ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রাকে তারা ইয়ংহা বলে থাকে। এই ইয়ংহা যখন সারা দেশে প্রকট হয়ে উঠে তখন জানেন কি হয়? তাদের দেশে বরফ নামে। বরফ পড়া মানে কোরিয়ান ভাষায় নুন বলা হয়। নুন একটি ডাবল মিনিং শব্দ। এর আরেকটি অর্থ হলো চোখ, তো আপনি যদি কোরিয়ান মুভি বা সিরিজের সাথে পরিচিত থাকেন, তাহলে অবশ্যই দেখে থাকবেন যে নুনে আচ্ছাদিত দেশটি কতটা সৌন্দর্যের অধিকারী হয়ে থাকে।
তাহলে খিয়উল নিয়ে আমরা কয়েকটি শব্দ জেনে ফেললাম, সে শব্দগুলো হলো, খিয়উল, ছুপতা, ইয়ংহা, নুন আমাদের দেশের মতোই কোরিয়াতেও শীতকালে ভিন্ন ভিন্ন খাবার তৈরি হয়। তো কোরিয়ানদের ঋতুভিত্তিক খাবারগুলো নিয়ে আলাদা করে একটি আর্টিকেল সাইটে পাবেন।
এবার আসি বসন্তকালে। ফোমকে কোরিয়ানরা বসন্তকাল বলে থাকেন। ইংরেজি ক্যালেন্ডারের মার্চ + এপ্রিল + মে এই তিন মাস ফোম বিরাজমান থাকে। খিয়উল বা শীতকালের পর বসন্তকালের আবহাওয়া বেশ উষ্ণ হয়ে থাকে। উষ্ণ আবহাওয়াকে ওরা তাততুতহাদা বলে থাকেন। ফোমের সাথে আরও একটি শব্দ যুগপৎ ভাবে চলে আসে, সেটি হলো আরুমদাপদা যার অর্থ মনোমুগ্ধকর। তো তাততুসহাদা আবহাওয়ায় চারপাশ ঝলমলে হয়ে উঠে, তখন চারপাশের প্রকৃতি সত্যিই আরুমদাপদায় পরিণত হয়ে উঠে।
বসন্তকালে আমরা কয়েকটি শব্দ জানলাম, শব্দগুলো হলো- ফোম, তাততুতহাদা, আরুমদাপদা।
ফোমের পরে আসে গ্রীষ্মকাল। কোরিয়ান ভাষায় গ্রীষ্মকালকে তারা ইয়রুম বলে থাকেন। ইয়রুম হচ্ছে কোরিয়ান ভাষায় একটি বহুল পরিচিত শব্দ। ইয়রুম জুন + জুলাই + আগষ্ট মাসে বিদ্যমান থাকে। ইয়রুমের সাথে বেশ কয়েকটি শব্দের উঠাবসা হয়ে থাকে। তার মধ্যে সবচেয়ে কমন শব্দটি হলো থপতা যার অর্থ গরম। তো থপতা যখন মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যায় তাকে বাংলা ভাষায় বলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এই সর্বোচ্চ তাপমাত্রাকে তারা বলেন ইয়ংসাং। আচ্ছা বলুন তো ইয়ংসাং এর বিপরীত অবস্থার কোরিয়ান নাম কি? আপনি যদি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই এই ছোট্ট প্রশ্নটির উত্তর জানবেন।
তো ইয়ংসাং যখন বছরের সবচেয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে যায়, সেই দিনটিকে কোরিয়ানরা বিশেষ একটি দিন হিসেবে উদযাপন করে থাকেন। জানেন সেই দিনটির নাম কি? ফোংনাল। ফোংনালে প্রতিটি রেস্টুরেন্টে রেস্টুরেন্টে একটি স্পেইশাল খাবার তৈরি করে থাকে। যা বছরের অন্য কোনো সময়ে পাওয়া না। শুধুমাত্র ফোংনালেই এই বিশেষ খাবারটি পাওয়া যায়। বিশেষ এই খাবারটির নাম হলো সামগিয়েথাং। সামগিয়েথাং কেমন খাবার এবং খাওয়ার উদ্দেশ্য কি? এসব প্রশ্নের উত্তর আপনি দ্বিতীয় বইয়ের ৩২ অধ্যায়ে পেয়ে যাবেন।
তো খিয়রুমে যখন জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠে তখন জুনের শেষ থেকে জুলাই মাঝেমাঝে আগষ্ট মাস পর্যন্ত আসে বর্ষাকাল আসে। বর্ষাকালকে কোরিয়ানরা ঝাংমাচ্ছল। ঝাংমাচ্ছলকেও কোরিয়ান মুভি বা সিরিজে অতি অতি মোহনীয় হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে। কোরিয়ান মুভি বা সিরিজের মতন আর কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে ঝাংমাচ্ছলকে এতোটা মোহনীয় ভাবে আর কেউ এতোটা আরুমদাপদা ভাবে উপস্থাপন করতে পারে কিনা জানা নেই।
গ্রীষ্মকালে আমরা কয়েকটি শব্দ জানলাম, শব্দগুলো হলো- ইয়রুম, থপতা, ইয়ংসাং, ফোংনাল, সামগিয়েথাং, ঝাংমাচ্ছল ও আরুমদাপদা।
ইয়রুম বা ঝাংমাচ্ছল পেড়িয়ে ক্যালেন্ডারের পাতায় নেমে আসে সেপ্টেম্বর + অক্টোবর + নভেম্বর মাস। এই তিনটি মাসে বিরাজমান থাকে শরৎকাল। কোরিয়ানদের ভ্রমণের জন্য সেরা একটি ঋতু হচ্ছে শরৎকাল। শরৎকালকে কোরিয়ানরা খাউল বলে থাকেন। খাউলে মূলত আবহাওয়া শীতল হয়ে থাকে। শীতল মানে শিয়নহাদা। শিয়নহাদায় আবহাওয়া মোটামুটি শীতল হয়ে থাকে। যা আস্তে আস্তে ছুপতায় নেমে যায়। ছুপতা মানে কোন আবহাওয়াকে নির্দেশ করে?
প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আপনাকে আবার এই আর্টিকেলের শুরুর দিকে যেতে হবে। তবেই উত্তরটি ঠোঁটের কোণে চলে আসবে।
শরৎকালে আমরা যে কয়টি শব্দ জানলাম, তা হলো – খাউল, শিয়নহাদা, ছুপতা।
যাইহোক এই হচ্ছে কোরিয়ানদের আবহাওয়ার হালকা পাতলা বিবরণ। আপনি যদি ভালোভাবে আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন, তাহলে আমার মনে হয় কিছুটা হলেও কোরিয়ান আবহাওয়া সম্পর্কে আপনাকে হেল্প করবে।
ওহো কোরিয়ান ঋতু ও আবহাওয়া নিয়ে আর্টিকেল লেখা হলো অথচ আপনাকে জানানোই হলোনা যে ঋতুকে কোরিয়ান ভাষায় কী বলে!! আবহাওয়াকে কোরিয়ান ভাষায় কি বলে?
ঋতুকে কোরিয়ান ভাষায় খিয়েজল বলা হয়। আর আবহাওয়াকে নালশি বলা হয়ে থাকে।